রাজহংসের চরিত্র

একাদশ শ্রেণীর সংস্কৃত গদ্যাংশ দশকুমারচরিতম্ পাঠ্যাংশ থেকে রাজহংসের চরিত্র বা মগধরাজ রাজহংসের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হল।

রাজহংসের চরিত্র বর্ণনা

প্রশ্ন:- দশকুমারচরিতম্ পাঠ্যাংশ রাজহংসের চরিত্র বর্ণনা কর।

সূচনা:- দণ্ডী প্রণীত “দশকুমারচরিতম্”-এর ‘পূর্বপীঠিকা’র প্রথমোচ্ছ্বাসের প্রারম্ভে মগধরাজ রাজহংসের সামান্য কিছু পরিচয় পাই। এর মাধ্যমে আমরা রাজহংসের চারিত্রিক গুণাবলির নিদর্শন পাই।

মহাপরাক্রমী রাজা

মগধ দেশের মহাপরাক্রমী রাজা হলেন রাজহংস। তাঁর দুই বাহু ছিল মন্দার পর্বতের মতো সুদৃঢ়। তিনি এই দৃঢ় বিশাল বাহুর দ্বারা ভীষণ সমুদ্ররূপ শত্রুপক্ষকে মন্থন করতেন। তিনি অস্ত্রনৈপুণো বিপক্ষ রাজাদের পরাজিত করেছিলেন।

সৌন্দর্যে কামদেবতুল্য

মগধরাজ রাজহংস ছিলেন কামদেবের তুলা এবং সকলের প্রিয়। “কন্দর্পসসৌন্দর্যতুদানির বদ্যরূপো ভূপো বভূব”। পদ্মজয়ী চন্দ্র যেন রাজহংসের মুখমণ্ডল। কামদেবের মীনকেতনের মৎসায় যেন তার নয়নযুগল, নিশ্বাস যেন মলয়সমীর। নবপল্লবের অস্ত্র যেন তাঁর অধরবিদ্ধ। কামদেবের ধনুর জ্যা রাজহংসের কোমল মৃণাল ভুজ, সহস্রদল পদ্মের মতো চরণদ্বয় কামদেবের ছত্রতুলা আর অন্য অংশগুলি কামদেবের কুসুমশর। তাই তিনি সকলের প্রিয় ছিলেন।

কীর্তিমান/যশস্বী

রাজহংস ছিলেন সমুদ্রমেখলা পৃথিবীর অধীশ্বর। এই সমুদ্রের রত্নই সমুদ্রের দেবতারা মুকুটে ধারণ করেন। তাঁর দিগন্তব্যাপী কীর্তির শুভ্রতা শরতের চন্দ্র কুন্দকুসুম, কর্পূর, শিশির, মৃণাল, রাজহংস, ঐরাবত, কাশফুল প্রভৃতির সঙ্গে তুলনীয়। সুশাসক । মগধরাজ যেমন ছিলেন বীর তেমনই ছিলেন সুশাসক। সকলে তাঁকে সম্মান করত এবং সকলের প্রিয় ছিলেন। তাঁর সুশাসনে প্রজাগণ সুখে বাস করত।

আদর্শ রাজা

আদর্শ রাজা হতে গেলে যেসব মহৎ গুণগুলি থাকার দরকার রাজহংসের মধ্যে তা ছিল। তিনি ধর্মজ্ঞ, জিতেন্দ্রিয়, মহাজ্ঞানী, মহাযশস্বী, সত্যনিষ্ঠ এবং সর্বদা প্রজাপালনে কর্তব্যনিষ্ঠ পুরুষ। তাই সকলের প্রিয় হাতে পেরেছিলেন। তিনি যজ্ঞানুষ্ঠানের দক্ষিণা দ্বারা শাস্ত্রজ্ঞ, গুণবান, বিছান, যশস্বী ব্রাহ্মণদের পালন করতেন। এর দ্বারা বোঝা যায়, রাজহংস ছিলেন। শ্রদ্ধাবান, জ্ঞানী, কর্তব্যপরায়ণ রাজা।

মূল্যায়ন

পরিশেষে বলা যায়, মগধরাজ রাজহংসরূপে কামদেব, গুণে আদর্শরাজা, পরাক্রমে মহাশক্তিধর, সুশাসক, গুণগ্রাহী রাজহংস সত্যই – “বেলামেখলায়িত ধরণী-রমণী-সৌভাগ্যভোগ-ভাগ্যবান্” মহারাজা। তাঁকে নমস্কার।

আরোও পড়ুন

Leave a Comment