‘ভারতবিবেকম্’ নাট্যাংশ অবলম্বনে নরেন্দ্রনাথের চরিত্র

একাদশ শ্রেণীর নাট্যাংশ হতে বড় প্রশ্ন – ‘ভারতবিবেকম্’ নাটকটি অবলম্বনে নরেন্দ্রনাথের চরিত্র বা ‘ভারতবিবেকম্’ নাট্যাংশ অবলম্বনে নরেন্দ্রনাথের চরিত্র বিশ্লেষণ

ভারতবিবেকম নাটকের বড় প্রশ্ন নরেন্দ্রনাথের চরিত্র আলোচনা অথবা, একাদশ শ্রেণীর সংস্কৃত বড় প্রশ্ন উত্তর ‘ভারতবিবেকম্’ নাটকটি অবলম্বনে নরেন্দ্রনাথের চরিত্রটি বর্ণনা করা হল।

‘ভারতবিবেকম্’ নাট্যাংশ অবলম্বনে নরেন্দ্রনাথের চরিত্র বিশ্লেষণ

প্রশ্নঃ- ‘ভারতবিবেকম্’ নাট্যাংশ অবলম্বনে নরেন্দ্রনাথের চরিত্র বিশ্লেষণ করো।

অথবা, ‘ভারতবিবেকম্’ নাটকটি অবলম্বনে নরেন্দ্রনাথের চরিত্রটি বর্ণনা করো।

উত্তরঃ- শ্রীমতীন্দ্রবিমল চৌধুরী রচিত ‘ভারতবিবেকম্‘ নাটকের পাঠ্যাংশের অন্তর্গত প্রথম দৃশ্যের একটি অংশের নাম ‘শ্রীরামকৃষ্মেন সহ শ্রীনরেন্দ্রস্য সাক্ষাৎকারঃ ‘ | এই দৃশ্যে রামকৃষ্ণদেবের সঙ্গে নরেন্দ্রের দু-একটি সংলাপে এবং রামকৃষ্ণদেবের স্বাতোক্তিতে নরেন্দ্রের চরিত্রের কয়েকটি দিক ধরা পড়ে। সেগুলি নিম্নলিখিতভাবে লিপিবদ্ধ করা যায়—

গানে নিপুণতা

সুরেন্দ্রনাথ নরেন্দ্রকে আগে থেকেই চেনেন। তাঁর বাড়ির কাছেই থাকেন নরেন্দ্র তিনি ভালো গান জানেন, এ কথা সুরেন্দ্র বলেছেন। তারপর রামকৃষ্ণদেবের অনুরোধে নরেন্দ্র যখন গান গাইলেন, রামকৃষ্ণদেব মুগ্ধ হলেন। রামকৃষ্মদেব বলে উঠলেন— “নরেন্দ্র। অপূর্ব তব কণ্ঠস্বরঃ”

আধুনিক বিজ্ঞানমনস্কতা ও বাস্তববাদিতা

আমরা জানি নরেন্দ্র ছেলেবেলা থেকেই দুরন্ত, ডানপিটে, দুঃসাহসী | বুদ্ধির দীপ্তি প্রকাশ পেত তাঁর কাজকর্মে, খেলাধুলায়। লেখাপড়ায় তাঁর ছিল গভীর আগ্রহ। তিনি দর্শন পড়েন কিন্তু অত তত্ত্বকথায় তাঁর তেমন আগ্রহ নেই। প্রথম রামকৃষ্ণদেবকে দেখে নরেন্দ্র তাঁর মধ্যে এক আনন্দজাগানো চাঁদের সন্ধান পান। তাঁর আরও মনে হয়, এই ব্যক্তি যেন কোটি সূর্যের মতো প্রভাময়, আবার কোটি চন্দ্রের মতো সুশীতল। কিন্তু এমন বোধ হলেও এক মুহূতেই তাঁর মনে হয় যে, এটা তাঁর ক্ষণিকের চিত্তবিকার নয়তো! কারণ, তাঁর পড়াশোনা তো মানব শরীরে ভাগবতসত্তার আরোপ সমর্থন করে না। তাহলে মানুষের মধ্যে সূর্য বা চন্দ্রের তুলনা তাঁর মনে এল কী করে? তাহলে কি তাঁর সাত শিক্ষা বাধ হল। নিজের বিদ্যাকে ধিক্কার জানিয়েছেন তিনি। এতে তাঁর বাস্তববাদী মনোভাবের প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রকাশ পায়। এই আচরণের মধ্যে দিয়ে তাঁর চরিত্রের আধুনিক বিজ্ঞানমনস্কতার দিকটিরও আভাস পাওয়া যায়।

ভক্তিপরায়ণতা

নরেন্দ্র ব্রাহ্মমন্দিরে যান, তাঁর নিজের পড়াশোনা করেন। কিন্তু এরই সঙ্গে তিনি ভক্তিমূলক গানের চর্চা করতে ভালোবাসেন। হিন্দুধর্মের তথাকথিত গোঁড়া, তত্ত্বসর্বস্ব দিক সম্পর্কে তাঁর সংশয় থাকলেও তিনি যে পরমতত্ত্বের প্রতি ভক্তিমান, তা শ্যামা মায়ের গানের মধ্য দিয়ে ঠাকুর রামকৃষ্মদেবের কাছে ধরা পড়েছে তাই তিনি বলেছেন, “অপরিমিতং চ তব ভক্তিমাহাত্ম্যম্”।

সর্বশুভঙ্করসদাশিব

রামকৃষ্মদেব প্রথম দর্শনেই বুঝেছিলেন যে নরেন্দ্র নামের এই যুবকটিই তাঁর দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত বিশ্বের কল্যাণকর সদাশিব। তাঁর মনে হয়েছিল, জগতের সমস্ত কল্যাণকারী শংকরই মনুষ্যরূপে তাঁর সামনে আবির্ভূত হয়েছেন। নরেন্দ্রের এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যটি পরবর্তীকালে জগতের সবার সামনে প্রকাশিত হয়েছিল।

‘ভারতবিবেকম্’ নাট্যাংশ হতে বড় প্রশ্নোত্তর

Leave a Comment