একাদশ শ্রেণীর গদ্যাংশ ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথার শব্দার্থ ও বঙ্গানুবাদ

উচ্চ মাধ্যমিক একাদশ শ্রেণীর ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা গদ্যাংশের মূলপাঠ, সন্ধিবিহীনপাঠ, অন্বয়, শব্দার্থ ও বঙ্গানুবাদ নিম্নে দেওয়া হল ।

Table of Contents

একাদশ শ্রেণীর ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা গদ্যাংশের শব্দার্থ ও বঙ্গানুবাদ

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ১

সন্ধিবিহীনপাঠ

শত্রব: অপি হিতায় এব বিবদন্ত: পরস্পরম্ |   চৌরেণ জীবিতং দত্তং রাক্ষসেন তু গোযুগম্ ||

অন্বয়

পরস্পরং বিবদন্ত: শত্রব: অপি হিতায় এব |  চৌরেণ জীবিতং দত্তং রাক্ষসেন তু গোযুগম্ |

শব্দার্থ

পরস্পরং (পরস্পর) বিবদন্ত: (ঝগড়া) শত্রব: (শত্রুরা) অপি (ও) হিতায় (মঙ্গল) এব (ই) |  চৌরেণ (চোরের দ্বারা) জীবিতং (জীবন) দত্তং (দান) রাক্ষসেন (রাক্ষসের দ্বারা) তু (কিন্তু) গোযুগম্ (গোরুদুটিকে) |

বঙ্গানুবাদ

পরস্পর ঝগড়া করলে শত্রুরাও মঙ্গলই করে থাকে | যেমন-চোরটি জীবন দান করল, আর রাক্ষসটি গোরু দুটিকে রক্ষা করল |

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ২

সন্ধিবিহীনপাঠ

অস্তি কস্মিন্ চিৎ অধিষ্ঠানে দরিদ্র: দ্রোণ: নামা ব্রাহ্মণ: প্রতিগ্রহণ: সততং বিশিষ্ট-বস্ত্র অনুলেপন-গন্ধ-মাল্য অলঙ্কার-তাম্বুল আদি-ভোগ-পরিবর্জিত:, প্ররুঢ়-কেশ-শ্মশ্রু-নখ-রোম উপচিত:, শীত উষ্ণ-বাত-বর্ষা আদিভি: পরিশোষিত: শরীর: |

শব্দার্থ  

অস্তি (আছে-এখানে ছিল) কস্মিন্ চিৎ (কোনো) অধিষ্ঠানে (স্থানে) দরিদ্র: (দরিদ্র) দ্রোণ: (দ্রোণ)  নামা (নামে) ব্রাহ্মণ: (ব্রাহ্মণ) প্রতিগ্রহণ: (পরের অনুগ্রহে ধনভোগী/পরের ধনে ধনবান) সততং (সব সময়) বিশিষ্ট-বস্ত্র (ভালো কাপড়) অনুলেপন (অনুলেপন) – গন্ধ (গন্ধ দ্রব্য) – মাল্য (মালা) অলঙ্কার (অলংকার) – তাম্বুল আদি (পান ইত্যাদি) – ভোগ (ভোগ্য বস্তু) – পরিবর্জিত: (বঞ্চিত), প্ররুঢ় (বড়ো বড়ো) – কেশ (চুল) – শ্মশ্রু (দাড়ি) – নখ (নখ) – রোম (রোম)  উপচিত: (ঢাকা পড়ে গিয়েছিল), শীত (শীত) উষ্ণ (গ্রীষ্ম) – বাত (ঝড়) – বর্ষা (বৃষ্টি) আদিভি: (ইত্যাদি দ্বারা) পরিশোষিত: (শুকিয়ে গিয়েছিল) শরীর: (শরীর) |

বঙ্গানুবাদ

কোনো স্থানে দরিদ্র দ্রোণ নামে ব্রাহ্মণ ছিল, সে পরের ধনে ধনবান, সে দরিদ্র হওয়ার কারণে সব সময় ভালো কাপড়, অনুলেপন, গন্ধ দ্রব্য, মালা, অলংকার, পান ইত্যাদি ভোগ্য বস্তু থেকে বঞ্চিত ছিল, তার বড়ো বড়ো চুল, দাড়ি, নখ, রোম সারা শরীরে ঢাকা পড়ে গিয়েছিল, শীত, গ্রীষ্ম, ঝড়, বৃষ্টি ইত্যাদি দ্বারা তার শরীর শুকিয়ে গিয়েছিল |

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ৩

সন্ধিবিহীনপাঠ

তস্য চ কেন অপি যজমানেন অনুকম্পয়া শিশু-গোযুগং দত্তম্ |

শব্দার্থ

তস্য (তার) চ (এবং) কেন অপি (কোনো এক) যজমানেন (যজমানের দ্বারা) অনুকম্পয়া (দয়াবশত) শিশু-গোযুগং (দুটি শিশু গোবৎস ) দত্তম্ (দিয়েছিল) |

বঙ্গানুবাদ

এবং তার (দ্রোণ) কোনো এক যজমান দয়াবশত দুটি শিশু গোবৎস দিয়েছিল |

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ৪

সন্ধিবিহীনপাঠ

ব্রাহ্মণেন চ বালভাবাৎ আরভ্য: যাচিত-ঘৃত-তৈল-যবস আদিভি: সম্বর্ধ্য সুপুষ্টং কৃতম্|

শব্দার্থ

ব্রাহ্মণেন (ব্রাহ্মণের দ্বারা) চ (এবং) বালভাবাৎ (বাল্য কাল থেকে) আরভ্য: (আরম্ভ করে) যাচিত (চেয়ে আনা) – ঘৃত (ঘি) – তৈল (তেল) – যবস (ঘাস) আদিভি: (ইত্যাদি দিয়ে) সম্বর্ধ্য (বর্ধিত) সুপুষ্টং (মোটা সোটা) কৃতম্ (করে তুলল)|

বঙ্গানুবাদ

এবং ব্রাহ্মণ অপরের কাছ থেকে ঘি, তেল, ঘাস ইত্যাদি চেয়ে এনে বাল্য কাল থেকে আরম্ভ করে গোবৎস দুটিকে বড়ো ও মোটা সোটা করে তুলল |

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ৫

সন্ধিবিহীনপাঠ

তৎ চ দৃষ্ট্বা — সহসা এব ক: চিৎ চৌর: চিন্তিতবান্ – “অহম্ অস্য ব্রাহ্মণস্য গোযুগম্ ইদম্ অপহরিষ্যামি” ইতি নিশ্চিত্য নিশায়াং বন্ধন-পাশং গৃহীত্বা যাবৎ প্রস্থিত: তাবদ্ অর্ধ-মার্গে প্রবিরল তীক্ষ্ণ-দন্ত-পঙ্ক্তি:, উন্নত:-নাসাবংশ:, প্রকট-রক্ত অন্ত-নয়ন:, উপচিত-স্নায়ু-সন্ততি: নত-গাত্র:, শুষ্ক-কপোল:, সুহুত-হুতবহ-পিঙ্গল-শ্মশ্রু-কেশ-শরীর: ক: চিৎ দৃষ্ট: |

শব্দার্থ

তৎ (তা) চ (এবং) দৃষ্ট্বা (দেখে) — সহসা (হঠাৎ) এব (ই) ক: চিৎ (কোনো এক) চৌর: (চোর) চিন্তিতবান্ (চিন্তা করেছিল) – “অহম্ (আমি) অস্য (এর) ব্রাহ্মণস্য (ব্রাহ্মণের) গোযুগম্ (গোরু দুটিকে) ইদম্ (এই) অপহরিষ্যামি (অপহরণ করব)” ইতি (এরূপ) নিশ্চিত্য (নিশ্চিত করে) নিশায়াং (রাত্রি বেলা) বন্ধন (বাঁধার) – পাশং (দড়ি) গৃহীত্বা (নিয়ে) যাবৎ (যখন) প্রস্থিত: (যাচ্ছিল) তাবদ্ (তখন) অর্ধ (মাঝ) – মার্গে (পথে) প্রবিরল (অতি বিরল) তীক্ষ্ণ (ছুঁচালো) – দন্ত (দাঁতের) – পঙ্ক্তি: (সারি যুক্ত), উন্নত:-নাসাবংশ: (উঁচু নাক ওয়ালা), প্রকট-রক্ত (প্রকট রক্ত বর্ণ) অন্ত-নয়ন: (চক্ষু প্রান্ত বিশিষিট), উপচিত-স্নায়ু-সন্ততি: (স্নায়ুগুলি বেরিয়ে গেছে এমন) নত-গাত্র: (গায়ের চামড়া বসে গেছে এমন), শুষ্ক-কপোল: (শুকনো গাল যুক্ত), সুহুত (সুন্দরভাবে যজ্ঞের আহুতি বহন কারী) – হুতবহ (অগ্নির মতো) – পিঙ্গল (পিঙ্গল বর্ণের) – শ্মশ্রু (দাড়ি) – কেশ (চুল) – শরীর: (শরীর) ক: চিৎ (কোনো একজনকে) দৃষ্ট: (দেখল) |

বঙ্গানুবাদ 

এবং তা দেখে (গোরু দুটিকে) হঠাৎই কোনো এক চোর চিন্তা করেছিল – “আমি এই ব্রাহ্মণের গোরু দুটিকে অপহরণ করব” | এরূপ নিশ্চিত করে রাত্রি বেলা বাঁধার দড়ি নিয়ে যখন যাচ্ছিল তখন মাঝ পথে অতি বিরল ছুঁচালো দাঁতের সারি যুক্ত, উঁচু নাকওয়ালা, প্রকট রক্ত বর্ণ চক্ষু প্রান্ত বিশিষিট,  স্নায়ুগুলি বেরিয়ে গেছে, গায়ের চামড়া বসে গেছে এমন, শুকনো গাল যুক্ত, সুন্দরভাবে যজ্ঞের আহুতি বহন কারী অগ্নির মতো পিঙ্গল বর্ণের দাড়ি, চুল, শরীর যুক্ত কোনো একজনকে দেখল |

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ৬

সন্ধিবিহীনপাঠ

দৃষ্ট্বা চতং তীব্র-ভয়ত্রস্ত: অপি চৌর: অব্রবীৎ – “কো ভবান্ ?” ইতি |

 শব্দার্থ

দৃষ্ট্বা (দেখে) চ (এবং)  তং (তাকে) তীব্র-ভয়ত্রস্ত: অপি (প্রচণ্ড ভয়ে সন্ত্রস্ত হয়েও) চৌর: (চোর) অব্রবীৎ (বলল) – “কো (কে) ভবান্ (আপনি) ?” ইতি (এরূপ) |

বঙ্গানুবাদ

এবং তাকে (রাক্ষস) দেখে প্রচণ্ড ভয়ে সন্ত্রস্ত হয়েও চোর বলল – আপনি কে ?” এরূপ |

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ৭

সন্ধিবিহীনপাঠ

স: আহ-“সত্যবচন: অহং ব্রহ্মরাক্ষস: | ভবান্ অপি আত্মানং নিবেদয়তু”|

শব্দার্থ

স: (সে) আহ (বলল) সত্যবচন: (সত্যবচন) অহং (আমি) ব্রহ্মরাক্ষস: (ব্রহ্মরাক্ষস)| ভবান্ (আপনি) অপি (ও) আত্মানং (নিজেকে) নিবেদয়তু (নিবেদন করুণ)|

বঙ্গানুবাদ

সে বলল – “আমি সত্যবচন নামে ব্রহ্মরাক্ষস | আপনিও নিজেকে নিবেদন করুণ” |

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ৮

সন্ধিবিহীনপাঠ

স: অব্রবীৎ“অহং ক্রূরকর্মা চৌর:, দরিদ্রস্য ব্রাহ্মণস্য গোযুগং হর্তুং প্রস্থিত: অস্মি” |

শব্দার্থ

স: (সে) অব্রবীৎ(বলল) অহং (আমি) ক্রূরকর্মা (ক্রূরকর্মা) চৌর: (চোর), দরিদ্রস্য (দরিদ্র) ব্রাহ্মণস্য (ব্রাহ্মণের) গোযুগং (গোরু দুটিকে) হর্তুং (চুরি করতে) প্রস্থিত: (বের) অস্মি (হয়েছি) |

বঙ্গানুবাদ

সে বলল–“আমি ক্রূরকর্মা চোর, দরিদ্র ব্রাহ্মণের গোরু দুটিকে চুরি করতে বের হয়েছি” |

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ৯

সন্ধিবিহীনপাঠ

অথ জাতপ্রত্যয়: রাক্ষস: অব্রবীৎ – “ভদ্র ! ষষ্ঠাহ্নকালিক: অহম্” |

শব্দার্থ

অথ (তারপর) জাতপ্রত্যয়: (বিশ্বাস উৎপন্ন হলে) রাক্ষস: (রাক্ষস) অব্রবীৎ (বলল) ভদ্র (মহাশয়)! ষষ্ঠাহ্নকালিক: (ষষ্ঠপ্রহরে ভোজন করি) অহম্ (আমি) |

বঙ্গানুবাদ

তারপর বিশ্বাস উৎপন্ন হলে রাক্ষস বলল – “মহাশয় ! আমি ষষ্ঠপ্রহরে ভোজন করি” |

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ১০

সন্ধিবিহীনপাঠ

অত: তম্ এব ব্রাহ্মণম্ অদ্য ভক্ষয়িষ্যামি |

শব্দার্থ

অত: (অতএব) তম্ (তাকে) এব (ই) ব্রাহ্মণম্ (ব্রাহ্মণকে) অদ্য (আজ) ভক্ষয়িষ্যামি (ভক্ষণ করব)|

বঙ্গানুবাদ

অতএব সেই ব্রাহ্মণকেই আজ ভক্ষণ করব |

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ১১

সন্ধিবিহীনপাঠ

তৎ সুন্দরম্ ইদম্ |

শব্দার্থ

তৎ (তাহলে) সুন্দরম্ (সুন্দর) ইদম্ (এটা)|

বঙ্গানুবাদ

তাহলে এটা খুব সুন্দর |

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ১২

সন্ধিবিহীনপাঠ

এককার্যৌ এব আবাম্ |

শব্দার্থ

এককার্যৌ (একই কাজ) এব (ই) আবাম্ (আমাদের দুজনের)|

বঙ্গানুবাদ

আমাদের দুজনের একই কাজ |

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ১৩

সন্ধিবিহীনপাঠ

অথ তৌ তত্র গত্বা একান্তে কালম্ অন্বেষয়ন্তৌ স্থিতৌ ।

শব্দার্থ

অথ (তারপর) তৌ (তারা দুজন) তত্র (সেখানে) গত্বা (গিয়ে) একান্তে (গোপনে) কালম্ (সময়) অন্বেষয়ন্তৌ স্থিতৌ (অপেক্ষা করতে লাগল)।

বঙ্গানুবাদ

তারপর তারা দুজন সেখানে গিয়ে গোপনে সময়ের অপেক্ষায় অপেক্ষা করতে লাগল।

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ১৪

সন্ধিবিহীনপাঠ

ব্রাহ্মণে প্রসুপ্তে চ তদ্ভক্ষণার্থম্ প্রস্থিতম্ রাক্ষস দৃষ্ট্বা চৌরঃ অব্রবীৎ ভদ্র ! ন এষ ন্যায়ঃ।

শব্দার্থ

ব্রাহ্মণে (ব্রাক্ষ্মণ) প্রসুপ্তে চ (ঘুমিয়ে পড়লে) তদ্ভক্ষণার্থম্ (তাকে খাবার জন্য) প্রস্থিতম্ (গমনকারী) রাক্ষস (রাক্ষসকে) দৃষ্ট্বা (দেখে) চৌরঃ (চোরটি) অব্রবীৎ (বলল) ভদ্র ! (মহাশয়) ন এষ ন্যায়ঃ (এটি ঠিক হচ্ছে না)।

বঙ্গানুবাদ

ব্রাহ্মণ নিদ্রিত হলে পর তাকে ভক্ষণ করার জন্য গমনকারী রাক্ষসকে দেখে চোরটি বলল—“মশায় ! এটি ঠিক হচ্ছে না ।

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ১৫

সন্ধিবিহীনপাঠ

যতঃ গোযুগে ময়া অপহৃতে পশ্চাৎ ত্বম্ এনম্ ব্রাহ্মণম্ ভক্ষয় ।

শব্দার্থ

যতঃ (যেহেতু) গোযুগে (গোরু দুটি) ময়া (আমার দ্বারা) অপহৃতে (অপহৃত হলে পর) পশ্চাৎ (তারপর) ত্বম্ (তুমি) এনম্ (এই) ব্রাহ্মণম্ (ব্রাক্ষ্মণকে) ভক্ষয় (ভক্ষণ কোরো)।

বঙ্গানুবাদ

যেহেতু  গোরু দুটি  আমার দ্বারা অপহৃত হলে পর তারপর তুমি এই ব্রাক্ষ্মণকে  ভক্ষণ কোরো ।

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ১৬

সন্ধিবিহীনপাঠ

সঃ অব্রবীৎ কদাচিৎ অয়ম্ ব্রাহ্মণঃ গোশব্দেন বুধ্যেত তদা অনর্থকঃ অয়ম্ মম আরম্ভঃ স্যাৎ ।

শব্দার্থ

সঃ (সে) অব্রবীৎ (বলল) কদাচিৎ (কখনও) অয়ম্ (এই) ব্রাহ্মণঃ (ব্রাক্ষ্মণ) গোশব্দেন (গোরুর শব্দে) বুধ্যেত (জেগে ওঠে) তদা (তাহলে) অনর্থকঃ (নিরর্থক) অয়ম্ (এই) মম (আমার) আরম্ভঃ (চেষ্টা) স্যাৎ (হয়ে যাবে)।

বঙ্গানুবাদ

সে বলল কখনও এই ব্রাক্ষ্মণ গোরুর শব্দে জেগে ওঠে তাহলে আমার এই চেষ্টা নিরর্থক হয়ে যাবে ।

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ১৭

সন্ধিবিহীনপাঠ

চৌরঃ অব্রবীৎ তব অপি যদি ভক্ষণায় উপস্থিতস্য অন্তরে একঃ অপি অন্তরায়ঃ স্যাৎ তদা অহম্ অপি ন শক্লোমি গোযুগম্ অপহর্তুম্  ।

শব্দার্থ

চৌরঃ অপি (চোরও) অব্রবীৎ (বলল)–“তব অপি (আপনারও) যদি (যদি) ভক্ষণায় (খাওয়ার জন্য) উপস্থিতস্য (উপস্থিত হওয়ার) অন্তরে (মাঝে) একঃ অপি (একটিও) অন্তরায়ঃ (বিঘ্ন) স্যাৎ (হয়) তদা (তাহলে) অহম্ অপি (আমিও) ন শক্লোমি (পারব না) গোযুগম্ (গোরু দুটো) অপহর্তুম্ (চুরি করতে) ।

বঙ্গানুবাদ

চোরটিও বলল—“তোমারও যাওয়া এবং ব্রাহ্মণকে খাওয়া এই দুয়ের মধ্যে যদি কোনো বিঘ্ন উপস্থিত হয়, তাহলে আমিও গোরু দুটিকে অপহরণ করতে সক্ষম হব না ।

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ১৮

সন্ধিবিহীনপাঠ

অতঃ প্রথমম্ গোযুগে ময়া অপহৃতে পশ্চাৎ ত্বয়া ব্রাত্মণঃ ভক্ষয়িতব্যঃ ।”

শব্দার্থ

অতঃ (সুতরাং) প্রথমম্ (আগে) গোযুগে (গোরু দুটো) ময়া (আমি) অপহৃতে (চুরি করে নিলে) পশ্চাৎ (পরে) ত্বয়া (আপনি) ব্রাত্মণঃ (ব্রাক্ষ্মণকে) ভক্ষয়িতব্যঃ (খাবেন)।”

বঙ্গানুবাদ

সুতরাং আগে গোরু দুটো আমি চুরি করে নিলে পরে আপনি ব্রাক্ষ্মণকে খাবেন ।”

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ১৯

সন্ধিবিহীনপাঠ

ইত্থম্ চ অহমহমিকয়া বিবদতোঃ তয়োঃ দ্বৈধে সমুৎপন্নে প্রতিরববশাৎ ব্রাহ্মণঃ জজাগার।

শব্দার্থ

ইত্থম্ চ (আর, এইভাবে) অহমহমিকয়া (আমি আগে, আমি আগে করতে করতে) বিবদতোঃ (বিবদমান) তয়োঃ (তাদের দুজনের মধ্যে) দ্বৈধে (মারামারি) সমুৎপন্নে (শুরু হলে) প্রতিরববশাৎ (কোলাহলে) ব্রাহ্মণঃ (ব্রাহ্মণ) জজাগার (জেগে উঠল)।

বঙ্গানুবাদ

আর, এইভাবে আমি আগে, আমি আগে করতে করতে বিবদমান তাদের দুজনের মধ্যে মারামারি শুরু হলে কোলাহলে ব্রাহ্মণ জেগে উঠল ।

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ২০

সন্ধিবিহীনপাঠ

অথ তং চৌরঃ অব্রবীৎ ব্রাক্ষ্মণ ত্বাম্ এব অয়ম্ রাক্ষসঃ ভক্ষয়িতুম্ ইচ্ছতি ।

শব্দার্থ

অথ (তারপর) তম্ (তাকে) চৌরঃ (চোরটি) অব্রবীৎ (বলল) ব্রাক্ষ্মণ (হে ব্রাক্ষ্মণ) ত্বাম্ এব (তোমাকেই) অয়ম্ রাক্ষসঃ (এই রাক্ষস) ভক্ষয়িতুম্ (খেতে) ইচ্ছতি (ইচ্ছা করছে)।

বঙ্গানুবাদ

তারপর তাকে চোরটি বলল হে ব্রাক্ষ্মণ তোমাকেই রাক্ষস খেতে ইচ্ছা করছে ।

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ২১

সন্ধিবিহীনপাঠ

রাক্ষসঃ অপি আহ ব্রাক্ষণ চৌরঃ অয়ম্ গোযুগম্ তে অপহর্তুম্ ইচ্ছতি ।

শব্দার্থ

রাক্ষসঃ অপি (রাক্ষসটিও) আহ (বলল) ব্রাক্ষণ (হে ব্রাক্ষণ) চৌরঃ অয়ম্ (এই চোরটি) গোযুগম্ তে (তোমার গোরু দুটি) অপহর্তুম্ (অপহরণ করতে) ইচ্ছতি (ইচ্ছা করছে)।

বঙ্গানুবাদ

রাক্ষসটিও বলল হে ব্রাক্ষণ এই চোরটি তোমার গোরু দুটি অপহরণ করতে ইচ্ছা করছে ।

ব্রাহ্মণচৌরপিশাচকথা পাঠ – ২২

সন্ধিবিহীনপাঠ

এবম্ শ্ৰুত্বা উত্থায় ব্রাহ্মণঃ সাবধানঃ ভূত্বা ইষ্টদেবতা মন্ত্রধ্যানেন আত্মানম্ রাক্ষসাৎ উদ্‌গূর্ণলগুড়েন চৌরাৎ গোযুগম্ ররক্ষ ।

শব্দার্থ

এবম্ (এই কথা) শ্ৰুত্বা (শুনে) উত্থায় (উঠে) ব্রাহ্মণঃ (ব্রাক্ষ্মণ) সাবধানঃ (সতর্ক) ভূত্বা (হয়ে) ইষ্টদেবতা মন্ত্রধ্যানেন (ইষ্টদেবতার মন্ত্র জপ করতে করতে) আত্মানম্ (নিজেকে) রাক্ষসাৎ (রাক্ষসের হাত থেকে) উদ্‌গূর্ণলগুড়েন (উত্তোলিত লগুড় বা লাঠির দ্বারা) চৌরাৎ (চোরের হাত থেকে) গোযুগম্ (গোরু দুটিকে) ররক্ষ (রক্ষা করল)।

বঙ্গানুবাদ  

এই কথা শুনে উঠে ব্রাক্ষ্মণ সতর্ক হয়ে ইষ্টদেবতার মন্ত্র জপ করতে করতে নিজেকে রাক্ষসের হাত থেকে উত্তোলিত লাঠির দ্বারা চোরের হাত থেকে গোরু দুটিকে রক্ষা করল।

Leave a Comment